চার পর্বের গল্প/ মহেঞ্জোদারো সুতা/ শেষ পর্ব

চার পর্বের গল্প/ মহেঞ্জোদারো সুতা/ শেষ পর্ব

মহেঞ্জদারো-সুতা

প্রতিভা সরকার

মাঝে দু দিন কেটে গেছে। রাকুল ম্যাডামের স্বামী সাইরাস ড্রাইভারকে দিয়ে সরকারি অতিথিশালায় রাজেশকে ডেকে পাঠিয়েছেন অন্তত পাঁচবার। রাজেশ দুবার এসেছে, তিনবার কাজ আছে বলে কাটিয়ে দিয়েছে। তবে এ কথা সত্যি, অনিন্দ্যসুন্দর, সরল কিন্তু অসুস্থ রাকুলের প্রতি তার একটা অব্যাখ্যাত টান জন্মেছে। সে মনেপ্রাণে চায় রাকুল ম্যাডাম ভালো হয়ে উঠুন। মনের বিকারের কারণে ইতিহাসের যে গোলকধাঁধায় উনি আটকে আছেন সেখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মুক্তি পান। তাই সেই ব্যাপারেই যখন সাইরাস তার সাহায্য প্রার্থনা করে বসল, তখন রাজেশ মহা মুশকিলে পড়ে গেল।

সরকারি অতিথিশালার বারান্দায় এক কাপ চা নিয়ে বসেছিল সাইরাস। সন্ধে সাড়ে ছ’টার বিলম্বিত সূর্যাস্ত তার ডানদিকের গালে চিবুকে সোনালি রঙ মাখিয়ে টুপ করে ডুবে গেল। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে রাজেশ দেখছিল রাশভারি ব্যক্তিত্ববান মানুষটি কেমন অসহায়ের মতো মাথা এলিয়ে প্রায় শুয়ে পড়েছে চেয়ারে। চোখজোড়া নিবদ্ধ রয়েছে মাথার ওপর এলইডি ল্যাম্পকে ঘিরে পোকামাকড়ের ওড়াউড়ির ওপর।

 প্রথম যেদিন রাজেশ আসে তাকে নিজের টেবিলে বসার অনুমতি দেয়নি সাইরাস। হয়ত একজন সফল শিল্পপতি হয়ে ট্রিপ প্রতি চারশ’ টাকার গাইডকে সোফায় বসতে দিতে তার কিন্তু কিন্তু ঠেকেছে। তার ইশারায় ড্রাইভার একটা প্লাস্টিকের চেয়ার ঠেলে দিয়েছিল রাজেশের দিকে। কিন্তু সেদিনের সাইরাস আর আজকের সাইরাসে অনেক তফাত। আজ তার গলায় কাকুতিমিনতি ঝরে ঝরে পড়ছে, রাজেশ মেরা ভাই, থোরা মেহেরবানি করো, নেহি তো…

রাকুল ম্যাডাম জেদ ধরে বসেছে তাকে লিটল রানের কাছে বান্নি গ্রাসল্যান্ডে নিয়ে যেতে হবে। সঙ্গে যাবে মেন্ড্রা। নাকি সেখানে জাকুস আসবে তাকে শেষ দেখা দিতে। তারপর রাকুল মুক্তি পাবে এই অসহ্য টানাপোড়েন থেকে। তার এক পা যদি বর্তমানে, আরেক পা তাকে টেনে রাখছে সাড়ে পাঁচ হাজার বছর আগেকার অতীতে। কখনও সে বাখিলে, কখনও সে মুম্বাইতে। মনে মনে লগ্ন হয়ে আছে কল্পনার জাকুসের দেহগন্ধে, এদিকে সাইরাসের সঙ্গে তার প্রেমজ বিবাহের বয়স পাঁচ বছর। আর কী আশ্চর্য বর্তমান স্বামীর সঙ্গে প্রথম রাত্রিবাসের কালেই নাকি রাকুলের কাছে ফিরে এসেছিল এইসব স্মৃতি অথবা কল্পনা। নিজেও অসহ্য কষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মেয়েটা, তার কাছের জনেরাও খুব বিভ্রান্তিতে আছে। যে মনস্তাত্ত্বিক তাকে দেখেন তার নির্দেশ অনুযায়ীই সাইরাস স্ত্রীকে নিয়ে এসেছে ঢোলাভিরার ধ্বংসস্তূপে। ডাক্তারের নির্দেশ মতোই সে রাকুল যা চায় তাইই করে চলেছে প্রাণপণে। এই মানসিক ঘোর বা ট্রান্স নাকি বাধাপ্রাপ্ত হলে আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করে!

এই একটা কারণে এই ধনাঢ্য প্রবল অহংকারী শিল্পপতিকে সহ্য করে রাজেশ। স্ত্রীকে ভালবাসে সাইরাস। তার মানসিক সুস্থতার জন্য সে সর্বত্র যেতে রাজি, জলের মতো পয়সা খরচে তার কিছু যায় আসে না, কিন্তু তার দৌড় ঐ অবদিই। ধ্বংসস্তুপের পাথুরে রাস্তায় রাকুলকে নিয়ে সে মাইলের পর মাইল হেঁটে বেড়াবে বা বান্নি গ্রাসল্যান্ডের নির্জন প্রান্তরে স্ত্রীর হাত ধরে রাখবে, এতটা করতে  শারীরিক মানসিক ভাবে অক্ষম এই ধনীর দুলাল, প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি। তাই খোঁজ পড়ে টাকা দিয়ে সার্ভিস কেনা যায় এরকম মানুষের। রাকুল যখন জেদ ধরেছে মেন্ড্রা তার সঙ্গে যাবে সিন্ধু নদীর তীরে, তখন যত টাকা লাগুক রাজেশকে দিতে রাজি সাইরাস।

ছ’ হাজার বছর আগে বান্নি তৃণভূমির অন্তর্দেশ চিরে বইত বিরাট নদ সিন্ধু। ব্যবসা বাণিজ্যের বাড়বাড়ন্ত, শস্যশ্যামলা ধরিত্রী, সবই ছিল তার দান। তখন সিন্ধুর দুপাশের গভীর অরণ্যের মেঝে আচ্ছাদিত ছিল হলদে সোনালী ঘাসে। কালক্রমে তার মূল ধারাটি দিক পালটে বইতে থাকে এখনকার পাকিস্তানি ভূখণ্ড দিয়ে। আর কচ্ছ প্রদেশের বহতা ধারাটি শুকিয়ে যেতে যেতে পড়ে থাকে কেবল শুকনো চওড়া খাত। নদীজলের সঙ্গে সঙ্গে অন্তর্হিত হয়েছে দুপাশের আকাশ-ছোঁয়া অরণ্য। সজলতা হারিয়ে মাটি ক্রমশ রুখাশুখা হতে হতে বিরাট মরুসদৃশ ভূখন্ডের জন্ম হয়েছে। মানুষ-প্রমাণ হলদে ঘাসে ঢেকে গেছে উষর প্রান্তর। আর অন্যত্র যেমন, তেমনই বাবলা গোত্রীয় কাঁটা গাছের বেঁটে বন হলদে ঘাসের গুচ্ছ ভেদ করে মাথা চাড়া দিয়েছে।

আরও কিছু পরিবর্তন হয়েছে এই তৃণভূমিতে যার ব্যাখ্যা সহজে মেলে না। কোনো কোনো অমাবস্যায় রাতের নিকষ কালো চিরে বেরিয়ে আসে যেন মাটির বুদবুদ, অদ্ভুতদর্শন নৃত্যপর এক আলোর উদ্ভাস। সাধারণত ন্যাশপাতি আকারের এই আলো নেচে বেড়ায় তৃণভূমি মাথার ওপর দিয়ে। কখনও গোল বা চৌকো আকারও ধারণ করে সে। কেউ তাকে দেখছে টের পেলে সেও নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে তাকে দেখে। কিন্তু কেউ অনুসরণ করছে টের পেলে চঞ্চল হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকে। অনুসরণ করতে থাকা নাছোড়বান্দাদের ভুলিয়ে নিয়ে চলে যায় কয়েক কিলোমিটার দূরের রানে যেখানে সমুদ্রের জল শুকিয়ে নুনের সাদা প্রান্তরের চেহারা নিয়েছে। সেখান থেকে স্থানীয়রাই অনেক ফিরে আসতে পারেনি, তাই অসমসাহসীরাও এখন কেউ চেষ্টা করে না। বিরল ট্যুরিস্টরা এখানে আসে তৃণভূমিতে বাসা বেঁধে থাকা দুষ্প্রাপ্য পাখি দেখার জন্য যা ভারতের আর কোথাও দেখা যায় না। আর আছে শক্তিময় বুনো  গাধা, পেছনের পায়ের একটি চাটে সব লীলাখেলা যে ঘুচিয়ে দিতে পারে। কিছু দূরেই কচ্ছের রান, তার নুন-সাদা মরু-সমুদ্র নিয়ে প্রকৃতির এক অপার বিষ্ময়। বান্নি গ্রাসল্যান্ড প্রকৃতির এক অপার কুহক, রাকুলের অদ্ভুত আবদার তাকে যেন আরও রহস্যময় করে তুলেছে।

গতকাল সন্ধেবেলা ড্রাইভার ও রাজেশকে নিয়ে সস্ত্রীক সাইরাস বান্নির সেরা ট্যুরিস্ট লজটিতে এসে পৌঁছেছে। ডিনারের পর বারান্দার গোল চেয়ারে বসে এইসব ভাবতে ভাবতে রাজেশের কেবলই মনে পড়ে যাচ্ছিল তার বন্ধুদের নিয়ে সেই ব্যর্থ এডভেঞ্চারের কথা। কী যে অদ্ভুত কান্ডকারখানা তার ভাগ্যদেবতার, আজ সে একা বসে আছে এখানে, হীরাভাই নেই, আহমেদ নেই। আছে একেবারে অচেনা অজানা সাইরাস আর তার বৌ রাকুল!

বাইরে অন্ধকারের ঘনত্ব দেখে মনে হয় আজ অমাবস্যা। একটা শিরশিরে হাওয়া এসে চোখে মুখে ঝাপটা দিচ্ছে। কোন দূর অন্ধকারে মাথা দোলাচ্ছে বিশাল তৃণভূমি! সিন্ধুর শুকনো খাতের ঠিক ওপরে গড়ে ওঠা এই বিলাসবহুল রিসর্ট থেকেও কান পাতলে তা শোনা যাচ্ছে। নিজের মনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে ক্লান্ত রাজেশ তার দৃষ্টি ছড়িয়ে দেয় নিকষ কালো অন্ধকারে। যা ঘটে ঘটুক, ঘটনা প্রবাহের ওপর তার কোনো হাত নেই, এটা ভেবেই শান্তি পাবার চেষ্টা করতে থাকে সে।

ঠিক তখনই পেছনের কাচে মোড়া ভারী পর্দা টানা ঘরের দরজা খুলে যায় খুট শব্দে। আলতো পায়ে বেরিয়ে আসে রাকুল। আর তার দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে রাজেশ। এ কী পোশাক পরেছে রাকুল! কচ্ছি মেয়েরা যেমন পরে, পিঠে সুতো দিয়ে টেনে বেঁধে রাখা লম্বা হাতাওয়ালা রঙিন কাপড়ের কোমর অব্দি জামা। নীচে গোল কাচ বসান ঘাগড়া। একটা নীল ওড়নার এক প্রান্ত বুকের সামনে গোঁজা, আর এক প্রান্ত মাথায় তুলে দেওয়া। ঘাড়ের ওপর ডানা ভাঙা পাখির মতো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে সোনালি মসৃণ চুলের মস্ত এলো খোঁপা। আরও নজর কাড়ছে তার গয়না। নাকে বড় নাকফুল। ডানহাতে কবজিতে দুটো, কনুইয়ের ওপর দুটো সাদা বালা, কিন্তু বাঁ হাতে কনুই থেকে প্রায় কাঁধ পর্যন্ত সার সার সাদা মোটা বালা। এই বালাগুলো এখন শঙখ এমনকি প্লাস্টিক দিয়েও তৈরি হয়। কিন্তু আগের দিনের অভিজাত কচ্ছি রমণীরা হাতির দাঁতে তৈরি এইরকম বালায় নিজেদের কবজি থেকে কনুই অব্দি সাজিয়ে নিত।

সে যাই হোক, রাকুলকে লাগছিল যেন ব্রীড়াবনতা নববধূ। তার চোখের কাজল, ওষ্ঠের সলজ্জ হাসি, চোখের চঞ্চল ভাব যেন দয়িতের মিলন প্রত্যাশায় উন্মুখ হয়ে আছে। রাজেশ হাঁ করে তাকিয়ে ছিল এই রহস্যময়ী নারীর দিকে, এ যা বলে তা কি কেবলই প্রলাপ, নাকি জাতিস্মর বলে সত্যি কিছু আছে! তার মুগ্ধ দৃষ্টির সামনে লজ্জায় রাঙা হয়ে রাকুল বলে, জাকুসের সঙ্গে আজ দেখা হবে মেন্ড্রা। তুমিও সঙ্গে থেক।

রাজেশ মনে মনে ভাবে অদ্যই তো শেষ রজনী। তেলও পুড়বে না, রাধাও নাচবে না। তবে সব না-এর শেষে, রাকুল ম্যাডাম যেন এই বিভ্রমমুক্ত হন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।

নাটকের শেষ অঙ্ক অভিনীত হতে যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার আর এক অভিনেতা তাহলে কোথায়! রাকুলের পেছনে ভারী পর্দা উড়ে যাচ্ছিল রানের খ্যাপা হাওয়ায়। রাজেশ দেখল, সাইরাস মদ্যপান শেষে গোল টেবিলের ওপর লম্বা বোতলের পাশে মাথা নামিয়ে রেখেছে। তার দম শেষ। সে ঘুমোচ্ছে নাকি নেশার ঘোরে অর্ধচেতন তা এতো দূর থেকে বোঝা যাচ্ছে না। খানিক পরে ড্রাইভার এসে তাকে শুইয়ে দেবে বিছানায়। সন্তর্পণে ভেজিয়ে দেবে দরজা।

এইটুকু মাথা ঘোরানোর ফাঁকেই, রাজেশ দেখে, রাকুল তরতরিয়ে এগিয়ে গেছে রিসর্টের মূল গেটে। সে লাফ দিয়ে উঠে রাকুলের পেছনে দৌড়োয়, ম্যাডাম, রাত করে যাচ্ছেন কোথায় !

তার ওপর সাইরাস সাহেবের এইরকমই নির্দেশ আছে। রাকুল যেখানে যাবে সেও সেখানেই তাকে অনুসরণ করবে। বেশি অসুবিধে হলে ড্রাইভার সঞ্জয়কে ডেকে নেবে।

রাকুলের ঠোঁট পুড়ে যাচ্ছে কী এক গূঢ় হাসিতে। হাসতে হাসতেই রাজহংসীর ভঙ্গিমায় সে এগিয়ে চলেছে সিন্ধুনদের চওড়া শুকনো খাতের ওপর গজিয়ে ওঠা মানুষ সমান লম্বা ঘাসবনের দিকে। অন্ধকারে প্রতি পদে হোঁচট খাচ্ছে রাজেশ, কিন্তু রাকুল এতো মসৃণ যেন তার পথ পূর্বনির্ধারিত এবং চেনা। কোথা থেকে একটা রাতচরা পাখির কান্না ভেসে এল। হয়ত কোনো সরীসৃপ তার নীড় ভেঙে তছনছ করে দিচ্ছে। আর ঠিক তখনই রাজেশকে স্তম্ভিত করে দিয়ে নুন-জমা উপসাগরীয় অঞ্চলের দিক থেকে  ভেসে আসতে লাগল এক ফোঁটা এক আলোর বিন্দু। চির বাত্তি! যেন তার উদ্দিষ্টই এই বেপথু কিন্তু অতিসজ্জিত মেয়েটি, এমন ভাবে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে আলোর বিন্দুটি ছুটে আসছিল এদিক পানেই। সঙ্গে সঙ্গে হাওয়ার বেগও প্রচন্ড বেড়ে গেল, কোথায় যে কত শত নাম-না-জানা পাখি উলুধ্বনি দেবার মতো চিৎকার করছিল, আতঙ্কে আর হাওয়ার ধাক্কায় রাজেশ বার বার পড়ে যাচ্ছিল। তার কনুই ছড়ে গেল, মাথার টুপি উড়ে গেল। তার অনুরোধ উপরোধ উপেক্ষা করে অবিচল রাকুল একরোখা গতিতে এগিয়েই চলল বিপরীত থেকে ধেয়ে আসা আলোটির দিকে। সেটাকে তখন একটি ন্যাশপাতির মতো কাঁধ চওড়া নীচেটা সরু মতো দেখাচ্ছে।

এবার রাকুল আর সেই অতিপ্রাকৃত আলো মুখোমুখি দাঁড়াল। তাদের মাথার ওপর তারা ভরা আকাশ, তাদের ঘিরে রাত- জাগা পাখির চিল চিৎকার আর উথাল-পাথাল হাওয়ার প্রবল শব্দ। রাজেশের বিস্ফারিত চোখের সামনে তার ওড়না উড়িয়ে দিল রাকুল। টেনে খুলে ফেলল তার বক্ষ আবরিত করে রাখা লম্বা জামার খোলা পিঠের ফাঁস-দড়ি। যখন সে ঘাগড়া খসিয়ে নিরাবরণ হচ্ছে তখন রাজেশের মাথা প্রচন্ড ঝিমঝিম করতে লাগল, তার মনে হল শান্ত ভাসমান অথচ স্থিরতা মাখান ঐ আলো ভালবাসায় ভরা চোখে একদৃষ্টে চেয়ে আছে রাকুলের দিকে। এতো স্নিগ্ধ তার আভা, তবু কেন তার মাথা ঝিমঝিম করছে তা বোঝার আগেই রাজেশ দেখল চির বাত্তির আলোর জ্যোতি যাকে ঘিরে নিচ্ছে সে আর রাকুল নেই, সে হয়ে গেছে মহেঞ্জোদারোর সেই নগ্নিকা, এক হাত ভর্তি যার শঙখ বালার সারি, কাঁধের ওপর এলো খোঁপা আর সর্বাঙ্গে যার একটি সুতোও নেই। আবরণ, আভরণহীন সেই কন্যা, লোকে যাকে মিউজিয়ামে দেখতে যায় !

সবই শুকনো নদী বক্ষে জায়গায় জায়গায় আটকে থাকা মিথেন গ্যাসের কেরামতি, সে চির বাত্তিই হোক বা তার ব্ল্যাক আউট হয়ে পড়ে যাওয়া, এসব রাজেশ খুব ভালো ভাবেই বোঝে। বাদবাকিটা তার লাগামহীন কল্পনা যা সারজল পেয়েছিল রাকুলের প্রলাপে। এ ব্যাপারে সে আরও নিশ্চিত হয়েছে যাবার সময় রাকুল ম্যাডামের ব্যবহারে। সাইরাসের হাতে হাত গলিয়ে সে বিরাট গাড়িটায় যখন উঠল তখন তার পরনে ছোট স্কার্ট, চোখে ঢাউস সানগ্লাস। রাজেশের দিকে একবার ফিরে তাকাল না। সাইরাস স্যার বরং জানালার কাচ একটু নামিয়ে একবার তিন আঙুলের মাথা নাচাল রাজেশের দিকে তাকিয়ে। ড্রাইভারের হাত দিয়ে পাঠান মোটা খামটা গুণে দেখে নেবার প্রয়োজন বোধ করল না রাজেশ। তার মনে হল মাটি থেকে উঠে আসা বুদবুদ যত তাড়াতাড়ি মাটিতে মিলায় ততই ভালো।

প্রতিভা সরকার

Nila Banerjee

পুকুরঘাট

একদিন আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে পুকুরঘাট নামের একটি মেয়েদের ভার্চুয়াল দল খুলে ছিলুম। অচিরেই সে কয়েকটি সদস্যের দল কয়েক হাজার সদস্যের মেয়েদের দল হয় ওঠে। পুকুরঘাট দলের মত এত গুণী মেয়েদের সমাহার বাংলাদেশে খুব কম ভার্চুয়াল দলে আছে। কাজেই সেই দল সেখানেই আটকে থাকবে না বলা বাহুল্য। তাই পুকুরঘাট দলের অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে প্রকাশিত হলো পুকুরঘাট পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

One thought on “চার পর্বের গল্প/ মহেঞ্জোদারো সুতা/ শেষ পর্ব

  1. খুব ভালো লাগলো। বিজ্ঞান এর যুক্তির মাঝেই অতি লৌকিক এর মিশেল, তার সঙ্গে ইতিহাসের এটা সুন্দর বর্ননা, মন ভরিয়ে দিল।

Others Episodes