আমরাই পারি

করবী মান্না

আমি ডাক্তার করবী  মান্না । আমি একেবারেই লিখতে পারিনা । তবু নীলার অনুরোধে একটু চেষ্টা করছি অনেক ভুল হবে অনেক হয়তো অপ্রাসঙ্গিক কথা বলব আগেভাগেই মাফ চাইছি সবার কাছে । অনেক গুণীজন আমাদের এই পুকুরঘাটে সদস্যা ।আমিও খুশি এই পরিবারের একজন হতে পেরে ।
যাই হোক এবার প্রসঙ্গে ফিরি । ঘর সামলানোর পাশাপাশি সংসারের বাইরে বেরিয়ে এসে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে তাল মিলিয়ে চলা নারীর সংখ্যা কিন্তু নেহাত কম না বরং বেশিই । ছোটবেলা থেকে মা কে দেখেছে বাবা-মা দুজনেই স্কুলে পড়াতেন । যদিও আমি বাপ সোহাগী ।  তবুও মাকে সব সময় একটা আলাদা  সম্ভ্রমের চোখে  দেখেছি। মাকে দেখেছি অনায়াসে  ঘর আর বাইরে সামলাতে । এখন মনে হয় কি করে এত পেরেছেন মা এতো সামলাতে ।
মেয়ে হিসেবে গর্ব হয় যখন কাদম্বিনী দেবীর মতো সাহসিনী নারীর জীবন কাহিনী পড়ি , অহংকার হয় অমলা শঙ্কর থেকে আশাপূর্ণা দেবী বা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার চেয়ারপার্সন অরন্ধতী ভট্টাচার্য বা বিশিষ্ট শিল্পপতি ফাল্গুনী নায়ার, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুষমা স্বরাজ , অভিনেত্রী তথা সাংসদ জয়া বচ্চনদের দেখি। নারী হিসেবে আত্মবিস্বাসী হয়ে উঠি যখন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী , করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখি । এঁরা প্রত্যেকেই সংসার  সামলে   বাইরের জগতে নিজ নিজ কার্যক্ষেত্রে  সফল হওয়ার  উজ্বল, উধাহরণ ।
আবার যখন দেখি বর্ষাকালে ধান রোয়ার  সময় বা এই শীতকালে আলুবীজ বসানোর  সময় আদিবাসী মহিলা কিসান তার বাচ্চাটিকে আলের ওপর শুইয়ে রেখে মাঝে মাঝে এসে দুধ খাইয়ে নিজের কাজে ফিরে যাচ্ছে তখন মনে হয় মেয়েরাই পারে ঘরে বাইরে সামলাতে।
আর আমি এবং আমার কর্তাবাবুটি দুজনেই পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য । উনি সিঙ্গুরের আর আমি হরিপালের বিধায়ক । আমরা দুজনে একই  বাইরের কাজে নিযুক্ত । দুজনে একই সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরোই । শুধু তফাৎ এইখানে যে  আমার ছেলে,  কত্তা কী খাবে কি পরবে আমাকেই ঠিক করতে হয় । এতে আমার কোনো ক্ষোভ নেই । আনন্দ হয় যখন ভাবি আমি মা বা  কারো স্ত্রী । বাইরের কাজের সঙ্গে ঘরটিকে যত্নে রাখাও আমার কাজ। ঘর বাইরে সামলাতে আমরা মেয়েরা  পারি।

করবী মান্না
পুকুরঘাট

পুকুরঘাট

একদিন আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে পুকুরঘাট নামের একটি মেয়েদের ভার্চুয়াল দল খুলে ছিলুম। অচিরেই সে কয়েকটি সদস্যের দল কয়েক হাজার সদস্যের মেয়েদের দল হয় ওঠে। পুকুরঘাট দলের মত এত গুণী মেয়েদের সমাহার বাংলাদেশে খুব কম ভার্চুয়াল দলে আছে। কাজেই সেই দল সেখানেই আটকে থাকবে না বলা বাহুল্য। তাই পুকুরঘাট দলের অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে প্রকাশিত হলো পুকুরঘাট পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 thoughts on “আমরাই পারি

  1. দারুণ লাগল লেখাটা। আপনি আদিবাসী কিসান মহিলার কথাটি উল্লেখ করেছেন বলে আরও ভালো লাগল। কারণ, অনেক সময়েই আমরা কর্মরত নারী সম্পর্কে বলতে গেলে ওঁদের কথা ভুলে যাই।

  2. এত ব্যস্ততার মধ্যেও যে আপনি লিখলেন আর এত সুন্দর ভাবে দরকারী কথা গুলো লিখলেন খুউব ভাল লাগলো.