না-লক্ষ্মীর কবিতা
নবনীতা সাঁতরা দে
আমি আল্পনা দিতে পারি না তুলির টান হয়ে আসে এবড়োখেবড়ো পাথুরে নদী হাতের আঙ্গুল পাথরে পাথরে ধাক্কা খায়। পুজোর মসৃণ দালানে লাফিয়ে ওঠা মুক্ত দানার মতো বৃষ্টি দেখতে পাই। প্রচুর আলোর মধ্যে গিয়ে দাঁড়ালে দু চোখ চলে যায় আলোর বাইরে। আমাদের মা চোখ বন্ধ করে আল্পনা দিতে পারেন। আমি ডাল ভাত পোস্তর গন্ধের সাথে মায়ের লক্ষ্মীর পাঁচালি পড়া শুনতে পাই। ফি বৃহস্পতিবার আমাদের বাড়ির লক্ষ্মীপুজোয় আমাদের মা দুপুরে নিরামিষ ভাত বেড়ে প্রদীপে তেল ঢালতে যেতেন সযত্নে। মায়ের লক্ষ্মী মেয়েটার শেষমেশ অপারেশন হলো না বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখে জানলাম গভীর অসুখ তার ধানের গোছার মতো সব চুল ঝরে গেছে। আমাদের মা সব ধান তুলে রেখেছেন তাঁর আঁচলে সারাজীবন ধরে লক্ষ্মীর ধান তুলে রাখলেন মা। তারপর থেকে মূর্তিরা সামনে এসে দাঁড়ালে আমার দুহাত দুদিকে কাঠ আমাদের মা আঁকড়ে থাকেন সেই না-লক্ষ্মীরই হাত। আর কোজাগরী চাঁদের আলোয় ভেসে আসে মঙ্গল হোক মঙ্গল হোক মঙ্গল হোক।

নবনীতা সাঁতরা দে