ওলোসই-সম্পাদকীয়

‘মেয়েদের মতো কথা বলিসনা তো’ এ তিরস্কার যে কোনওপুরুষকে মাটিতে মিশিয়ে দেয়। এ তিরস্কার পুরুষের জোটে মেয়েলি ভঙ্গিমার জন্য নয়, কারণ আচরণে, ভঙ্গিমায়, চেহারায় চরম পুরুষালি পুরুষও একথা শুনেছেন বহুবার। তবে কি মেয়েদের আলাদা শব্দ আছে, আলাদা ভাষাও আছে কি কোনও! বাংলা ভাষায় লিঙ্গ সচেতনতা কম, তবু মেয়েদের মতো কথা বাঙালি পুরুষের কাছে লজ্জার।

এন্ড্রুজেনাস মানুষেরা মরণ কথাটি খুব ব্যবহার করে, যা ভাল্লাগেনা, ইসস, গাঁয়ের হলে মুখপোড়া, আ মলো যা ইত্যাদিও তাঁদের বলতে শোনা যায়। আসলে এ শব্দে তাঁদের মেয়েলিপনা আরও প্রখর হয়ে ওঠে, এগুলি আসলে মেয়েলি শব্দ । এসব শব্দ পুরুষেরা কমই ব্যবহার করেন। কিন্তু মাত্র কয়েকটি শব্দ তো আর ভাষা নয়। তার জটিল গঠন আছে। ভাষাবিদরা সে সমস্তর ব্যখ্যা নিশ্চয়ই জানেন। কিন্তু কিছু একটা আছে যার থেকে আমাদের নিত্য ব্যবহৃত ভাষাই হঠাৎ হঠাৎ মেয়েলি ভাষা হয়ে ওঠে!

সেকি ভাষার মধ্য দিয়ে মেয়েদের সীমিত জীবনযাপনের প্রকাশ নাকি, মেয়েদের ভাষা ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা, নাকি এটা মেয়েদের বিরুদ্ধে পুরুষালি কোনও রাজনীতি, নাকি সত্যি সত্যিই মেয়েদের আলাদা কোনও ভাষা আছে। সেইটে খুঁজে পেতেই আমাদের এবারের সংখ্যা ‘মেয়েলি ভাষা’। এ সংখ্যায় ভারত বাংলাদেশের লেখকেরা পুকুরঘাটকে লেখা দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন। তাঁদের পুকুঘাটের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা। এ সংখ্যার লেখা গোটা মাস জুড়ে রোজই আমরা একটু একটু করে আপলোড করবো। কেবল মেয়েলি ভাষা নয়, ভাষা সংক্রান্ত আরও নানান লেখা থাকবে।

আমার নিজের ভাষাটিকে আমার মাতৃভাষা বলে চিহ্নিত করি। মানে সে তো মেয়েলি ভাষাই হলো, কিজানি! মায়ের ভাষায় কথা বলুন দেখবেন মেয়েলি ভাষা লজ্জার নয়। সকলকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা। মাতৃভাষার জয় হোক, বাংলা ভাষার জয় হোক।

 

নীলা বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদক

পুকুরঘাট পত্রিকা

পুকুরঘাট

পুকুরঘাট

একদিন আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে পুকুরঘাট নামের একটি মেয়েদের ভার্চুয়াল দল খুলে ছিলুম। অচিরেই সে কয়েকটি সদস্যের দল কয়েক হাজার সদস্যের মেয়েদের দল হয় ওঠে। পুকুরঘাট দলের মত এত গুণী মেয়েদের সমাহার বাংলাদেশে খুব কম ভার্চুয়াল দলে আছে। কাজেই সেই দল সেখানেই আটকে থাকবে না বলা বাহুল্য। তাই পুকুরঘাট দলের অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে প্রকাশিত হলো পুকুরঘাট পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *