শোভনাদি যা বললেন

ঘরোয়া টুকিটাকি

     এক সময়ে প্রতিটি মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারের দেওয়ালে একটা ফ্রেমে বাঁধানো বাড়ি র মেয়েদের হাতের নিখুঁত সেলাই এর নকশা করা পদ্ম ফুলের ওপরে ও নীচে লেখা থাকতো
   “সংসার সুখের হয়
রমনীর গুণে”, অর্থাৎ তখন থেকেই মেয়েদের সর্বগুণসম্পন্না ‘রমণী’ করে তোলার প্রয়াস শুরু হয়ে যেত। পরবর্তী তে যাতে তারা গৃহকর্ম নিপুণা সংসারের সবার মন যুগিয়ে চলা সন্ধারাণী স্বরূপা গৃহবধু হিসেবে বাপের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি র মুখ উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।
যদিও বর্তমানে গৃহবধুরা এখন শুধুমাত্র শ্বশুরবাড়ি র চৌহিদ্দির মধ্যেই আটকে থাকে না, তাদের ঘরের সঙ্গে বাইরে র কাজ ও সামলাতে হয় এবং সেখানে ও তার গুণের ও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়।
    আমি পঞ্চাশ বছর ধরে সংসার করতে গিয়ে যেসব অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি তার থেকে ই কিছু ঘরোয়া টিপস দিতে চাই এখনকার এই ঘর ও বার রক্ষা করতে চেষ্টা করছে যারা তাদের জন্য।
১নম্বর টিপস:
      শ্বশুরবাড়ি র সবাই যত ই আশা করুন যে নতুন বৌ প্রথম দিন থেকেই আগেকার বাচ্চা চাকরের মতো হাসিমুখে দৌড় ঝাঁপ করে গুষ্টিশুদ্ধ লোকের ফাইফরমাস খাটা দিয়ে তার সংসার যাত্রা শুরু করে ধীরে ধীরে রাঁধুনী কাম চাকরানী কাম মাষ্টারনী থেকে স্বামীর অংকসঙ্গিনী, বংশধরপ্রসবিনী মাতা হয়ে তাকে জাঁতি হাতে ‘দাসী ‘আনতে পাঠানো এবং তারপর তার আনা সেই দাসীটিকে এক ই ভাবে বাধ্য গৃহবধু করে গড়ে তোলা পর্যন্ত সমস্ত কর্তব্য অক্ষরে অক্ষরে পালন করুক। কিন্তু আমার টিপস হলো মাথা ঠান্ডা রেখে শ্বশুরবাড়ি র সবার কথা শুনলেও কাজ করতে হবে নিজের বিদ্যা বুদ্ধি ও অর্জিত শিক্ষা কে কাজে লাগিয়ে নিজের মনের কথা শুনে চলতে হবে পাক্কা ডিপ্লোম্যাটিক কায়দা য় ।তাতে তারা মনে মনে বিরক্ত হলেও মুখে বিশেষ কিছু বলতে পারবে না পারিবারিক সুনাম রক্ষা র জন্য। নিজের সুমধুর ও হাস্যমুখে র কিন্তু নিজস্ব বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত দিয়ে তাদের বশ করার টেকনিক রপ্ত করা টা ই হলো সংসারে নিজের সগৌরব উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করার প্রথম ধাপ।
      এই এক ই টোটকা কিন্তু কর্মক্ষেত্রে ও প্রযোজ্য।
     সেখানে ও অযথা তর্ক বিতর্ক এড়িয়ে নিজের কাজের প্রতি সৎ এবং দায়িত্বের প্রতি দায়বদ্ধ থেকেই নিজের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে প্রকাশ্যে কোনো বিরোধিতা র সুযোগ না দিয়ে।
আমার দ্বিতীয় টিপস :
      আমাদের দেশে এখনো প্রধানতঃ বাড়ি র ছেলেরা ই বাইরের কাজ করেন ও উপার্জন দ্বারা সংসারে র দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তাই তাদের পারিবারিক কুটকচালী র যাবতীয় ধারাবিবরনী অফিস থেকে ফেরা মাত্র ই দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। নইলে অযথা ভদ্রলোকের সুগার, প্রেসার ও কোলেস্টেরল বাড়িয়ে পঁয়তাল্লিশের আগেই বুকে স্টেন্ট বসাবার খরচের গন্ধমাদন টি চাপিয়ে দেওয়া উচিৎ হবে না।
   আর শাশুড়ি /ননদরা ও খুশি হবে যে লাগানি ভাঙানি করে দ্বিতীয় কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ না বাধানোর জন্য। আর কর্তাটি ও খুশ যে মেয়েলি কুটকচালী র খাপ পঞ্চায়েত এর মোড়লের দায়িত্ব পালন করার মতো অপ্রিয় কাজের ভাগীদার হতে হলো না বলে।
   অতএব, রমণীদের ডবল বেনিফিট ও সংসারে শান্তি দু দিকে ই লাভ।
তৃতীয় টিপস :
                     খবরদার পাশের ফ্ল্যাটে বা পাশের বাড়ির সঙ্গে নিজের রান্নার কারখানা র প্রোডাক্ট আদান প্রদানের ভুল টি ভুলে ও করা চলবে না।
তাহলেই কিছু দিনের মধ্যেই পাড়ায় কাক/চিল দেখা যাবে না। সম্পর্ক অবশ্যই বজায় রাখতে হবে বিগলিত করুণা, জাহ্নবী যমুনা “র মতো হাসি ও বাক্যবিনিময়ের মাধ্যমে।
   তবে যারা কর্মরতা, তাদের কিন্তু নিকটতম আত্মীয় বা প্রতিবেশী র সঙ্গে একটা গভীর সম্পর্ক রাখতে ই হবে কেন না প্রয়োজনে আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার সন্তান এবং বাড়ি র অনেক কাজ স্বেচ্ছায় ও সানন্দে পালন করবে।
যেমন আপনার সন্তান হয় তো শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্কুলে যেতে পারলো না, অথচ ঐ দিন ই আপনার কর্মক্ষেত্রে জরুরি মিটিং বা প্রেজেন্টেশন থাকায় ছুটি নেওয়া অসম্ভব, আর আপনার কর্তা র পক্ষে ও হঠাৎ করে বাড়িতে থাকা সূর্য র পশ্চিমে উদিত হওয়ার মতো ই অকল্পনীয়, সেক্ষেত্রে কিন্তু মুশকিল আসান হিসেবে এগিয়ে আসতে পারেন আপনার নিকটতম প্রতিবেশিনী। তিনি সানন্দে আপনার অসুস্থ সন্তানের দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে সস্নেহে তাকে খাইয়ে দাইয়ে, গল্প বলে, গান শুনিয়ে বুঝতেই দেবে না মায়ের অনুপস্থিতি, তাই এমন কিছু মানুষের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলা ও খুবই দরকার।
একটু ভালো ব্যবহার, বা দুটো মিষ্টি কথার বিনিময়ে এনারা অনেক দায়িত্ব নিয়ে থাকেন যেমন আপনার হাসিমুখে র অনুরোধে তারা আপনার গ্যাসের ডেলিভারি নিয়ে রাখতে পারেন, COD তে আসা আপনার ফ্লিপকার্ট বা আমাজন এর বস্তু টি ও গাঁটের কড়ি খরচ করে সানন্দে নিয়ে রাখেন। তাই এমন সহৃদয় কিছু মানুষের সাথে অবশ্যই সুসম্পর্ক তৈরি করা টা ও খুবই দরকার। এমন প্রতিবেশী রা দরকারে আপনার নিজের বা স্বামী/সন্তানের অসুস্থতার সময় নিজের ঘর পরিবার ছেড়ে আপনার সঙ্গে রাত জাগতেও দ্বিধা করেন না… এটি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাপ্রসূত পরামর্শ।
     কর্মক্ষেত্রে ও উর্দ্ধতন ও অধোঃস্তনদের ভুলে ও কাকা, মামা বা দাদা বানানো চলবে না কিন্তু সবার কাছেই নিজেকে সুভদ্র ও সহৃদয় সহকর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে এমন করে যে সবাই ভাববে তিনি ই আপনার একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরশীল সহকর্মী।
টিপস নম্বর পাঁচ :
         মাঝে মাঝে ই স্বামীর ও পুত্র কন্যাদের বন্ধু বান্ধব দের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতে হবে যাতে আপনার চোখের আড়ালে তারা কাদের সাথে মেলামেশা করে অথবা কেমনকরে কথাবার্তা বলে সে বিষয়ে একটা সুস্পষ্ট ধারণা করা যায় এবং সেইমত তাদের বিষয়ে সচেতনতা ও সাবধানতা অবলম্বন করা যায় তাদের অগোচরে ই। সেই সঙ্গে তাদের বন্ধুদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়ানোর জন্য তাদের কাছ থেকে আনুগত্য বা ভালবাসা ও পাওয়া যায় অকপটে।
পঞ্চম টিপস :
             এযুগের চাকুরিরতা রমণীদের সব চেয়ে বড় সমস্যা হলো ঘরের সঙ্গে বাইরে র সমন্বয় এর জন্য সবকিছু সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করার জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট করা। না না, এজন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি বা প্ল্যানিং কমিশনের পরামর্শ প্রয়োজন নেই। নিজেকে ই উপযুক্ত পরিকল্পনা করে আগের সন্ধ্যে তেই “শ্রীময়ীর সংসার” দেখতে দেখতেই পরের দিনের টিফিনের চাউমিন বা চিঁড়ে র পোলাও বানানো র জন্য গাজর, ক্যাপসিকাম, বিনস কুঁচিয়ে রাখলে, বা নুডলস সেদ্ধ করে সাদা তেল মাখিয়ে বাক্স করে ফ্রিজে রেখে দিতে পারলে সকালে র তুফান মেলের মতো ছোটার একটু রাশ টানা যায়।
    এছাড়া রান্না র দিদি বা কাজের মাসির ক্লাস কে মাথায় না রেখে তাদের ও ভাল সহচরী করে নেওয়া টা ও খুব দরকার ।
    ওদের ও পারিবারিক সমস্যার সমাধান করা বা তাদের মেয়েদের কন্যাশ্রী র /লক্ষ্মী ভান্ডারে র ফর্ম ফিলাপ করে দিয়ে কিংবা একদিন সময় করে তাদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাঙ্ক /পোস্ট অফিসে র একাউন্ট খুলতে সাহায্য করে তাদের আনুগত্য অর্জন করে তাদেরকে স্থায়ী ভাবে আপনার সহায়িকা বানিয়ে নিতে হবে। কারণ এরা তখন আপনার অসুবিধা র কথা ভেবে অনেক বাড়তি কাজ করে দেবে খুশি হয়ে। অনেক সময় ও শ্রমের সাশ্রয় করে দেবে এরা ই, এই পরামর্শ টা মাথায় রাখলে লাভ ছাড়া লোকসান হবে না।
    তাছাড়া আগের রাতেই হাতের কাছে ছেলে মেয়ে, কর্তার টিফিন বাক্স, জলের বোতল, ন্যাপকিন  গুছিয়ে রাখলে সকালে র তাড়াহুড়ো একটু কম হয়।
   আর নিজের শাড়ি ব্লাউজ, ব্যাগ, ছেলে মেয়েদের রুটিন মিলিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে পেন্সিল ছুলে পেন্সিল বক্স সব কিছু ঠিকঠাক করে সাজিয়ে রাখলে সময়ের একটু সাশ্রয় হবে। কর্তা মশাই এর সার্ট প্যান্ট, রুমাল মোজা ও রাতেই ঠিক জায়গায় রেখে দিলে তাঁকে ও “এটা কোথায়, ওটা কোথায়” করে পাড়া মাথায় তুলতে হবে না আর আপনাকে ও মুখের গরাস পাতে ফেলে পড়িমড়ি করে ছুটোছুটি করতে হবে না?
বাচ্চা দের স্কুল ইউনিফর্ম ও হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রেখে দিতে হবে যাতে সকালে সেসব খুঁজে হয়রান হতে  না হয় ।
       পরিবারে বয়স্করা থাকলে কোনো একটা ছুটি র দিনে তাঁরা কখন কি ওষুধ খাবেন সেসব নির্দেশ গোটা গোটা অক্ষরে লিখে একটা চার্ট বানিয়ে তার চারপাশে কিছু নান্দনিক রং বেরং এর নকশা এঁকে যদি তাঁদের খাটের পাশের দেওয়ালে টাঙিয়ে রাখতে পারেন তো আপনার প্রশংসা আর খ্যাতি বাড়ি র চৌহিদ্দি ছাড়িয়ে ছড়িয়ে যাবে দিকে দিকে…..মিলিয়ে দেখবেন এই গরীবের পরামর্শে র ফলাফল, এক্কেরে একশোয় একশো।
ষষ্ঠ টিপস :
              যাদের ঘরে তিন থেকে ছ /সাত বছরের বাচ্চা আছে, তারা বাড়িতে অতিথি এলে কদাপি সেইসব প্রতিভাবান সন্তানদের এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটির নমুনা পেশ করার জন্য চাপাচাপি ভুলেও করবেন না। কারণ ঐ সব বিড়ম্বিত অতিথিরা আপনার বানানো অতি উপাদেয় চা /জলখাবারকে ও বিস্বাদ ভাববেন এবং অন্যান্যদের কাছে আপনার এই কান্ড নিয়ে আপনাকে হাসির খোরাক বানিয়ে ফেলবে।
সাত নম্বর টিপস:
                   ননদদের ও শাশুড়ির বাপের বাড়ি র দেওয়া উপহার যত ই স্বস্তার খেলো মাল ই হোক না কেন, তা হাতে নিয়ে এমন উচ্ছ্বসিত হতে হবে যে মনে হবে তারা যেন আপনার হাতে আকাশে র চাঁদ এনে দিয়েছেন যা আপনি জীবনেও পাওয়ার আশা করেন নি।
  ব্যস, তাহলেই “অল কিলিয়ার অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট”
অষ্টম গুরুত্বপূর্ণ টিপস :
          যত ই চৈত্র সেল থেকে গাদা গাদা শাড়ি কিনে আলমারি ভর্তি করুন না কেন, পুজোর আগে কর্তা কে নিয়ে পুজোর বাজার করতে গিয়ে শাশুড়ি শ্বশুর এবং ননদদের জন্য ছাড়া ভুলে ও নিজের বা  বাপের বাড়ি র লোকেদের জন্য একটা রুমাল ও কিনবেন না।
   এতে কর্তা ও খুশ আর শ্বশুরবাড়ি র সাত গুষ্টি ও খুশ, জনে জনে আপনার গুণকীর্তন শোনাবেন তাঁরা এবং তারা ই আপনাকে তাড়া দেবেন বাপের বাড়ি র সবার জন্য কেনাকাটা করার জন্য আর আপনাকে ও এমন ভাব দেখাতে হবে যেন এই বাজারে বাপের বাড়ি র সবার জন্য এতো টাকা খরচ করার মোটেও ইচ্ছে নেই, নেহাত শাশুড়ি মা চাইছেন তাই……
  নয় নম্বর টিপস :
    অফিসে র বসের বিবাহ বার্ষিকী তে গিয়ে হিপোপটেমাস বা হাড়গিলের মতো গাঁইয়া সিরিয়াল এর হিরোইন এর মতো সাজুগুজু করা স্ত্রী অথবা ননদের জা এর ন্যাকামি ও আদেখলেপনা  দেখে যত ই পেটের মধ্য থেকে ভসভসিয়ে হাসি উঠে আসুক না কেন, তাকে কন্ট্রোল করে সেইসব নায়িকাদের দেখে প্রশংসার বন্যা বইয়ে দিতে হবে আপ্লুত হয়ে। তাদের ফুটপাথে কেনা ব্যাকলেস ব্লাউজের ডিজাইন দেখে জিজ্ঞেস করতে হবে “এটা নিশ্চয়ই সব্যসাচী???”
      দেখবেন তখন আপনার খাতির যত্ন এর বহর এবং সেখানে উপস্থিত সবার কাছে তারা কেমন করে আপনার গুণকীর্তন করে,
      এ ব্যাপারে আমি ১০০%গ্যারান্টি দিতে পারি, মিলিয়ে দেখবেন।
 দশম ও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় টিপস :
            বাচ্চারা যেসব বাহনে করে স্কুলে যায় বা যারা আয়ামাসিদের তত্বাবধানে থাকে, সেইসব সহায়ক /সহায়িকা দের বেতন ছাড়া ও মাঝে মাঝে সামান্য অথচ যা তারা ইচ্ছে স্বত্বে ও কিনে উঠতে পারে না, তেমন কিছু উপহার কিনে দেবেন। এর বিনিময়ে তাদের আন্তরিক সহৃদয় পরিসেবা নিশ্চিত করতে পারবেন খুব সহজেই।
আর রান্না র মাসি বা কাজের মাসির ক্ষেত্রে ও এটা অবশ্যই প্রযোজ্য। বিশেষ করে আপনি কোথাও বেড়াতে গেলে প্রথমেই এদের জন্য কিছু ছোট খাটো উপহার কিনতে হবে। ঐ সামান্য মালা, পার্স বা ওয়াল হ্যাঙ্গিং বা সদৃশ চাবির রিং দিয়ে ওদের মুখের হাসি এবং আনুগত্য এনক্যাশ করতে পারবেন খুব সহজেই। যদিও আমার ধারণা সকলেই এটা করে থাকেন, তবু আর একবার মনে করিয়ে দিতে চাইলাম।
       এই তালিকায় ঐ সহৃদয় প্রতিবেশীদের ও রাখতে কিন্তু ভুলে যাবেন না???
         আজ এই পর্যন্ত ই থাক। এইগুলো একটু “টেরাই” করে দেখুন সদ্য, মধ্য এবং আদ্য বিবাহিত মহিলারা এবং কর্মক্ষেত্রে ও সদ্য, মধ্য এবং আদ্য কর্মীরা।
        দেখবেন আপনার সংসার এর টি আর পি অনায়াসে “শ্রীময়ী” বা “মিঠাই” এর রেটিং কে টপকে এগিয়ে যাবে অনেক দূর।
গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি যে আপনার কপালে ও হয় তো ঝুলতে পারে অলিখিত সেই সাইনবোর্ড টি
       “সংসার সুখের হয়
     রমণীর গুণে”
তবে যাওয়ার আগে এই শেষ টিপস টি দিয়ে যেতে চাই……..
              কর্মরতারা ভুলেও কর্মক্ষেত্রে র বস এর যোগ্যতা ও সাফল্যের গল্প স্বামী বা শ্বশুরবাড়ি র লোকেদের কাছে করবেন না।
তাহলেই আপনার বাকি সব প্রচারের আঁচে এক বালতি জল ঢালার মতোই হয়ে যাবে কিন্তু ।অতএব, সুধী সাবধান, “ফুঁক ফুঁক কে কদম বড়হানে হোগা সাথীয়াঁ”
           মহিলা রা যে সত্যি ই “দিদি নাম্বার ওয়ান” এটা প্রমাণ করার জন্য অযথা লাইন দিয়ে ঘেমে নেয়ে অডিশনের দরকার নেই, আর চড়া মেকআপ করে সারাদিন ধরে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে, রুটি বেলে, ভেজা কাপড় মেলে, বালিশের ঢাকা পরিয়ে প্রমাণ করার কোনো প্রয়োজন নেই।
   আমি বিশ্বাস করি যে আগেকার সংসারের সীমানায় আটকে থাকা মা /মাসিমাদের তুলনায় অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় এযুগের ঘর ও বাইরে র জগতের মধ্যে ব্যালান্স করে চলা মেয়েদের।
        তাদের নিষ্ঠা, দায়িত্ব ও কর্তব্য তাদের প্রত্যেক কে ই প্রকৃত দিদি নাম্বার ওয়ান করে তুলেছে। আক্ষরিক অর্থেই তারা একাধারে “গৃহিনী সচিব ও সখা” এবং একেবারে দশভূজা ও শক্তিরূপিনী মহামায়া ।এরা রাঁধেন এবং চুল ও বাঁধেন সুচারুভাবে । তাই এদের উপদেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু ঐ যে বলে না বুড়ো হলে ই জ্ঞান দেওয়ার ভিমরতী বাড়ে, তাই সেই অভ্যাসে ই চান্স ছাড়তে পারলাম না, খুলে বসলাম জ্ঞানের ঝুড়ি, কিছু মনে কোরো না কেউ, বয়স এর দোষ হিসেবে ই হজম করে নিও এই অযাচিত পরামর্শগুলো
শোভনা মুখার্জি
পুকুরঘাট

পুকুরঘাট

একদিন আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য নিয়ে পুকুরঘাট নামের একটি মেয়েদের ভার্চুয়াল দল খুলে ছিলুম। অচিরেই সে কয়েকটি সদস্যের দল কয়েক হাজার সদস্যের মেয়েদের দল হয় ওঠে। পুকুরঘাট দলের মত এত গুণী মেয়েদের সমাহার বাংলাদেশে খুব কম ভার্চুয়াল দলে আছে। কাজেই সেই দল সেখানেই আটকে থাকবে না বলা বাহুল্য। তাই পুকুরঘাট দলের অন্যতম উদ্যোগ হিসেবে প্রকাশিত হলো পুকুরঘাট পত্রিকা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 thoughts on “শোভনাদি যা বললেন

  1. ওহ অসাধারণ, হাসির মোড়কে কিছু অমূল্য পরামর্শ, দারুণ লাগলো দিদি!

    1. দারুণ লাগলো। মেয়েদের জীবনটাই ব্যালেন্স। আমি এর মধ্যে কত টিপস খুব মেনে চলি। যেমন বাড়ির সহায়িকাদিদিদের মাঝেসাঝেই একটু ছোটখাটো উপহার কিনে দেবার, মাথার ক্লীব, নেলপালিশ, ছোট ব্যাগ, টুকি টাকি খাবার যেটা ওরা হয় তো সবসময় কিনে উঠতে পারে না। শাশুড়ি মায়ের পছন্দের জিনিস উপহার, ছুটির দিনে নিজে হাতে একটু অন্যরকমের টিফিন তৈরি, শ্বশুরবাড়ি র আত্মীয় স্বজন এলে তাদের আন্তরিক যথাযথ আপ্যায়ন করা। এতে কিন্তু আমি যথেষ্ট লাভবান হয়েছি

  2. শোভনাদি,যুগ যুগ জিও। ফোন টা আড়াল করে কনফিডেন্সিয়াল রিপোর্ট পড়ার মতো আপনার টিপস্ পড়ে নিলাম ‌
    ভালো থাকবেন, দিদি।

  3. দারুন টিপস শোভনা দি। নয় নম্বর টা ফাটাফাটি 😀।

  4. দারুণ উপকারী টিপস্। এগুলো সত্যিই খুব কাজে আসবে।👌👌